বসন্তের সেদিনঃ প্রথম পর্ব

শীত কালে সকাল ৭.৩০ টা মানে খুব বেশি বেলা না । কনকনে শীতে আরাম প্রিয় বিলাসী মানুষজন এমনিতেই ঘুম থেকে একটু দেরি করে ওঠে । কথায় আছে , “ দুধভাত সবারই ভালো লাগে ” তেমনি আরাম আয়েসও বেশিরভাগ মানুষ পছন্দ করে । পছন্দ করলে কি হবে সবার কপালে আরাম থাকে না । কারো পেটের দায়ে কারো পিঠের দায়ে আরাম হারাম হয়ে যায় । গত তিনদিন যাবৎ পিঠের দায়ে রক্তিমের এই আরাম হারাম হয়ে গেছে । বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্স্ট ইয়ারের ক্লাস শুরু হয়েছে মাত্র তিন দিন । এর আগে ছুটী-ছাটায় দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা গেলেও এখন বাধ্য হয়ে সকালে উঠে ভার্সিটির বাস ধরতে হবে । এমনিতেই  সকালে  ঘুম থেকে দেরি করে ওঠার অভ্যাস তার উপর শীতের সকাল হলে তো কোন কথাই নেই ।  অনেক দিনের অভ্যাস দূর করতে সময় দরকার । এই ব্যাপার টা রক্তিম বুঝলেও তার বাবা নজরুল ইসলাম খান একদমই বুঝতে চান না । বুঝবেন কি করে, চাকরি করেন  বেসরকারী ব্যাংকে ।  অফিসে একটু দেরি করে পৌছালেই লেট খাতায় নাম চলে যায় । মাসের শেষে বেতন তুলতে গেলেই বুঝতে পারেন দেরি করে অফিসে আসার ঝাল । তাই তিনি নিয়ম করে রাতে ঘুমাতে যান আবার নিয়ম করেই সকালে উঠেন । উঠেই প্রথমে সরাসরি ছেলের রুমে চলে যান । কপালে চুমু খেয়ে বলেন, বাবা রক্তিম ওঠ সকাল হয়ে গেছে । সকালের বাতাস টা একটু গায়ে লাগা । কে শোনে কার কথা । উ করে উত্তর দেয় আর পাশ ফিরে শোয় । একমাত্র ছেলে বলে ঠিক যে পরিমান আদর করেন আবার কথা না শুনলে ঠিক একই পরিমান শাষন করেন । বেশ কয়েক বার ডাকার পর নজরুল সাহেব স্বর পাল্টান । রক্তিম তুই উঠবি না আমি লাঠি নিব । বাবার ভয়ে চোখ ডলতে ডলতে বাথরুমের দিকে চলে যায় । পত্রিকা হাতে নিয়ে গরগর করতে থাকে, আমাদের সময় আমরা রোজ ভোরে উঠতাম, ব্যায়াম করতাম আর একদিনও ক্লাস কামাই করতাম না । আর এখনকার ছেলেপেলে যা হয়েছে না সব যেন সাহেব বাবু ! এরই ফাকে স্ত্রী ডেকে বলল, কই গো এক কাপ চা চেয়েছিলাম সেই কখন তুমি এখনো দিলে না । সাফিনা বেগম উত্তর দেয়, আর একটু ধৈর্য্য ধর । তরকারি টা নামিয়ে নেই। এসময়ে পুরো পেপারে চোখ বুলাতে  লাগলো । কিছুক্ষন পর সাফিনা চা হাতে দাঁড়িয়ে

-এই যে তোমার চা ।

-সেই কখন চা চাইলাম আর এখন তোমার দেওয়ার সময় হলো?

– গত রাতের মাংসের ভূনা টা চুলায় ছিল কিভাবে চা দেই বলো । রান্না বান্নায় দেরি হলো তোমার আবার অফিসে লেট হয়ে যাবে ।

-তোমার ছেলেকে সেই কখন থেকে ডাকছি নবাবজাদার ঘুমই ভাঙ্গে না । তুমি দেখো আল্লাহ না করুক ওর যদি কোন দিন বড় ক্ষতি হয় তবে তা ঘুমের কারণেই হবে ।

– সাত সকালে তুমি এসব কি অলুক্ষনে কথা বার্তা বলছো । নিজের ছেলের অনিষ্ট কামনা কেউ করে?

– আহা তুমি ভুল বুঝছো কেন? বাপ হয়ে কি আমি ওর ক্ষতি কামনা করতে পারি? আমি তো আছি আশঙ্কায় ।

-তাই বলে এভাবে বলবে?

তুমি গোসল সেরে নাও আমি টেবিলে খাবার দিচ্ছি বলে রান্না ঘরের দিকে চলে গেল সাফিনা বেগম । বাথরুম থেকে বেরিয়ে বারান্দায় চলে আসে রক্তিম । মহাখালীতে ওয়ার্লেস গেট এলাকায় ৬ তলা বিল্ডিং এর ৫ম তলায় রক্তিমদের বসবাস । ঢাকা শহরে এক বিল্ডিংএর কাঁধে পা রেখে অন্য বিল্ডিং ওঠে কিন্তু রক্তিমদের সৌভাগ্য তাদের বিল্ডিংএর আশে পাশে তেমন কোন বিল্ডিং নেই । ওদের বিল্ডিং এর সামনে প্রসশ্ত রাস্তা সংলগ্ন সরকারী স্টাফ কোয়ার্টার আর বাকি তিন পাশেই ফাকা পড়ে আছে । রক্তিমের ধারণা এই ফাকা জায়গাগুলোও আর ফাকা থাকবে না । জমির মালিকগুলো নেহাত গরিব বলে বিল্ডিং প্রজনন শুরু করতে পারে নি । তিনরুমের ফ্ল্যাটের দক্ষিনের রুম টা রক্তিমের। সাথেই বারান্দা । গোলাপের প্রতি তার বিশেষ ভালোবাসার কারণে বারান্দায় টবে করে গোলাপের চাষ করে । সকাল বেলা দখিনা বাতাসে গোলাপের সুবাসে রক্তিমের মন টা ভরে যায় । ঘুম থেকে ওঠার পর বাবার প্রতি মেজাজ খারাপ হলেও এখন বেশ ভালো লাগছে । আসলেই সকাল টা অনেক সুন্দর । গতকাল একটা কুড়ি আধা ফোটা ছিল । আজ তা প্রায় বিকশিত । ফুলের কাছে গিয়ে বুকভরে নিঃস্বাস নেয় । ফুল কিনতে তার কখনোই ভালো লাগে না । বন্ধুদের জন্মদিনে নিজের গাছের ফুল উপহার দেয় । রক্তিমের মনে মনে একটা সুপ্ত বাসনা আছে । প্রতিদিন তার মনের মানুষকে নিজ বাগানের গোলাপ উপহার দিবে । আর বলবে শুধু গোলাপ কেন, পৃথিবীর সব ফুলই তোমার প্রতি ঈর্শান্বিত । তুমি শ্রেষ্ঠ ফুল, সব চাইতে সুন্দর ফুল । কিন্তু হায় কোথায় সে? না রক্তিমের কোন গার্লফ্রেন্ড নাই । এটা তার চিন্তা চেতনা । হঠাৎ পিতৃদেবের গলার আওয়াজে কল্পনার জগৎ থেকে বাস্তবে ফিরে আসে । টেবিলে নাস্তা দেওয়া হয়েছে । খেতে আয় ।

-তোর ক্লাস কয়টায় ।

-৯ টা থেকে শুরু । ১ টায় শেষ । মাঝে ১০ টায় গ্যাপ আছে ।

-এত কষ্ট করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছিস অথচ তোর আগ্রহ স্বতঃস্ফুর্ততা নেই । কারণ কি? সারা রাত করিস কি?

– কোথায় নেই আছে তো । শুধু সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারি না ।

-ক্লাস শেষে সোজা বাসায় চলে আসবি । অযথা আড্ডা দিয়ে সময় নষ্ট করবি না। পলিটিক্যাল কোন ছেলেদের সাথে মিশবি না । ১০০ টাকা তোর মায়ের কাছে থেকে নিয়ে যাস ।

-টাকার কথা না বললেও পারতে ওটা আমি এমনিতেই নিব কিন্তু বাবা পলিটিক্যাল ছেলেদের সাথে মিশবো না কেন সেটা একটু বলো তো?

– মুখে মুখে কথা বলবি না । যেটা নিষেধ করেছি সেটা তোর ভালোর জন্যই করেছি ।

নাস্তা শেষে নজরুল সাহেব অফিসে চলে যান। সেই ছোট বেলা থেকেই শুনে আসছে এটা করবে না, ওটা করবে না কিন্তু কেন করবে না তার উত্তর নেই । শুধু একটাই উত্তর বড় হলে সব বুঝতে পারবে। আর কত বড় হব । সুনীল গাঙ্গুলীর কবিতার লাইনের মত, বাবা, আমি আর কতো বড় হবো? আমার মাথা এ ঘরের ছাদ  ফুঁড়ে আকাশ স্পর্শ করলে তারপর আমি সব বুঝতে পারব?

 

হলের ছেলেরা, কোনরকমে একটা জিন্স আর টি-শার্ট সাথে একটা চপ্পল পড়েই ক্লাসে চলে আসে ।তাদের ধারণা কাছেই ডিপার্টমেন্ট এত সাজগোজের দরকার কি? রক্তিম কিন্তু পোশাক-আশাকের দিকে কিঞ্চিত স্মার্ট । চুলে স্প্রে, সাদা স্টাইলিশ শার্ট সাথে জিন্স, পায়ে কেডস পড়ে রেডি ।

-মা দুইশো টাকা দাও তো ।

-তোর বাবা তো ১০০ দিয়ে গেছে ।

-আহ ! বুঝো না কেন, ভার্সিটিতে পড়ি, ১০০ টাকা দিয়ে চলে? বন্ধু-বান্ধবের কাছে মান থাকে?

-নে আমার কাছে এত ব্যাখ্যা করতে হবে না ।

লক্ষি মা আমার এই কথা বলে মাকে চুমু খেয়ে বেরিয়ে গেল রক্তিম ।পাগল ছেলে । টাকা দিলেই মা ভালো আর টাকা না দিলেই মন্দ ।

 

 

ক্লাস শুরু ৯ টা থেকে । প্রথমেই থার্মাল ফিজিক্সের ক্লাস ।মকবুল স্যারের ক্লাস । এর পরে ১ ঘন্টা বিরতি । ১১ টায় ক্যালকুলাস মাইনর ক্লাস করতে হয় সাইন্স এনেক্সে শহীদ মিনারের পাশে যে চারতলা ভবন আছে সেখানে । গণিত বিভাগ তৃতীয় তলায় । বিল্ডিং টা প্রায় ইংরেজী ইউ আকৃতির ।এর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যেতে বিরক্ত লাগে । মনে হয় ১০ টাকা রিকশা ভারা লাগবে । এরই সামনে উপবৃত্তাকার মাঠ সবুজ মাঠ । সূর্যের আগমনীতে কুয়াশা হালকা হয়ে গেছে । ঘাসের উপর শিশির প্রায় শুকিয়ে গেছে । রক্তিম মাঠের মধ্যে তার বন্ধুদের সাথে বসে আছে । নতুন বন্ধু । ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পর তাদের সাথে পরিচয় হয়েছে । শুভ্র, অমি, তূর্য আর নিশান এরাই হলো রক্তিমের নতুন বন্ধু । পরিচয় পর্বের প্রথম থেকেই তারা খুবই ক্লোজ হয়ে গেছে । বন্ধুদের নিক নেম বাছাই সেই প্রথম দিনেই হয়ে গেছে । নিশানের নাম পতাকা , শুভ্রর নাম বাংলা লিখার সফটওয়ার অভ্রর নামানুসারে অভ্র । আর অমি কে বমি । রক্তিমের নাম ব্লাড । বাকি থাকে তূর্য । তূর্য নিয়ে কেউ কোন ফানি নাম বের করতে পারে নি । এই ফাইভ স্টারের মধ্যে সবচেয়ে চালাক চতুর শুভ্র  । সে তূর্যর একটা নাম দিয়েছে । নামটা আবার একটু ১৮ প্লাস হয়ে যায় । ত এর পরিবর্তে ব আর ঊ-কারের পরিবর্তে ঈ-কার । তাতে যেটা হয় বীর্য । নাম শুনেই তূর্যের মেজাজ খারাপ হয়ে যায় । কিন্তু কিছু বলে না । বন্ধু-বান্ধব এরকম একটু আধটু ফান করতেই পারে । তবে তারা তূর্যকে লোক সমক্ষে ঐ নামে ডাকে না । অভ্র টা বড্ড কথাপ্রিয় । কথা ছাড়া থাকতেই পারে না । আড্ডার বেশিরভাগ সময়ই শুভ্রর কথা শুনতে হয় বাকিদের । কলেজের কাহিনী, স্কুলের কাহিনী , পরিবারের কাহিনী আরো কত কি । যেকোন ঘটনা যেকোন বিষয়ে তার কলেজের নইলে স্কুলের এক বড় ভাইয়ের সাথে কোন না কোন ভাবে মিলে যায় ।না মিললেও সমস্যা নাই । ওরা তো কলেজের বড় ভাইদের চিনে না, সুতরাং গল্প একটা বানিয়ে বললেও সমস্যা নেই ।

 

 

এনেক্সের মাঠে গোল হয়ে বসে গল্প করছে এই পাঁচ তারা। হঠাৎ উপবৃত্তাকার রাস্তার বামদিকে রক্তিমের চোখ আটকে যায় । অনেক ক্ষন স্থির হয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে । রক্তিমের হৃদস্পন্দন বেড়ে যায় । সে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না । তিনটি মেয়ে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে । রক্তিমের দৃষ্টি ঠিক মাঝের জন কে কেন্দ্র করে । আগে পিছে কিছু না ভেবে দ্রুত চলে যায় ঐ মেয়েদের দিকে । পিছন থেকে নিশান ডাকে , রক্তিম কোথায় চললি । কোন সাড়া নেই । থাকবে কি করে । পৃথিবী যেন হঠাৎ তার ঘুর্ণন থামিয়ে দিয়ে স্থবির হয়ে গেছে । সমস্ত কোলাহল থেমে গেছে। কোথাও কেউ নেই । রক্তিমের সামনে শুধু সেই মেয়ে আর রক্তিম । এমন মাহেন্দ্র ক্ষনে কে তাকে থামায় ?

-হাই কি খবর কেমন আছো? আমাকে চিনতে পেরেছো?

-হ্যা চিনতে পেরেছি । এবং ভালো আছি । তুমি ভালো আছো তো?

-হ্যা অনেক ভালো আছি । কি নাম তোমার ?

-শিমু । তোমার ?

-রক্তিম । আচ্ছা কোন ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হয়েছো তুমি?

-জিওগ্রাফীত এন্ড ইনভায়রনমেন্ট । তুমি?

-আমি ফিজিক্সে ।

-তাই নাকি। খুব ভালো । আচ্ছা ভালো থেকো পড়ে কথা হবে  ।

রক্তিমের দম প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম । ঘন ঘন নিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে আড্ডায় যোগ দিল । এবার শুরু হলো বন্ধুদের টিজ । শুভ্রর উদ্বেগ, দোস্ত তিনদিনেই বাজিমাত করলি । কে এই মেয়ে জলদি বল । একটু গো-বেচারা টাইপের নিশান বলল, দোস্ত তোর গার্লফ্রেন্ড ম্যানেজ হয়ে গেলো? আমাকে একটা ব্যাবস্থা করে দে না? অমি সবার কথা থামিয়ে বলল, রক্তিম ঘটনা টা খুলে বল না কেই এই মেয়ে?

Permanent link to this article: https://www.borgomul.com/rafiq/438/


মন্তব্য করুন আপনার ফেসবুক প্রোফাইল ব্যবহার করে

14 comments

Skip to comment form

  1. অসাধারন হয়েছে তবে বাকিটা শেষ করলে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারতাম =D

    1. বাকিটা শেষ করতে একটু অপেক্ষা করতে হবে । কয়েক টা পর্বে সাজিয়েছি । ২য় পর্ব প্রায় রেডি ।

  2. বসন্তের সেদিন কি হল ??? রক্তিম এর কি শিমুর প্রতি কিছু জাগ্রত হ্ল??? তা জানার অধীর আগ্রহ নিয়ে বসে রইলাম

    1. গল্পের শেষে জানতে পারবে কি হয়েছিল বসন্তের সেদিন। ২য় পর্বে শিমু সম্পর্কে জানতে পারবা ।

      1. আশা রাখি আপনার লেখনীর ছোঁয়ায় বসন্তের সেদিন যেন চির রঙ্গিন হয়ে ফুটে উঠে । বাই দ্যা অয়ে কিউরিয়াস মাইন্ড ওয়ান্টস টু নো এটা গল্প না উপন্যাস???????

        1. 😀 😀 লেখকের স্ট্যামেনার উপর নির্ভর করছে যে আসলে এটি গল্প না উপন্যাস। আনাড়ী লেখক তো…

  3. Valo lagtese…..:-)

    1. ভাই আপনি যে পড়েছেন এতেই আমি খুশি। আর ভালো লাগাতে মহা খুশি… 😀

  4. ভালো লাগলো। চালিয়ে যাও ! তোমার মতো সাধুর পেটে যে এত প্রেম তাতো জানতাম না ।

    1. অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রেম তো সাধুর জন্যই নাকি… 🙂

  5. মুগ্ধ আমি,তোর এই প্রেমকাহিনী পড়ে এই অধমের বুকেও একটুখানি প্রেম জেগে উঠলো।

    অপেক্ষায় রইলাম……বাকি অংশের।

    1. তাহলে বলা চলে আমি স্বার্থক। ধন্যবাদ।

  6. ভালোইতো !! কিন্তু ফিজিক্সের পোলা গণিতে আইসাই প্রেমে পড়ল !! কার্জন হলে কি সুন্দরী নাই? 😉

  7. ভালোইতো !! কিন্তু ফিজিক্সের পোলা আনেক্সে আইসাই প্রেমে পড়ল !! কার্জন হলে কি সুন্দরী নাই? 😉

মন্তব্য করুন