Higgs Mechanism : অনেক অনেক এলোমেলো কথা – ০২ হিগস জিনিসটা আসলে কী?

 

হিগস একটা পার্টিকেল। এখনো পুরোপুরি ভাবে আবিষ্কৃত হয়নি। তবে সার্নের এক্সপেরিমেন্ট যেমনটা বলছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে হিগস পাওয়ার সম্ভবানা প্রচন্ড বেশি।

হিগস বোসন কণাটি নিয়ে এত কোলাহলের কারন আছে। এটার এত গুরুত্ব কেন, তা খুব কম কথায় ব্যাখ্যা করি। প্রথমে খটোমটো করেই একটু বলি। পার্টিকেল ফিজিক্সের স্ট্যান্ডার্ড মডেল অনুযায়ী সকল কণার ভর তৈরি হয় হিগস বোসনের সঙ্গে ঐ কণা গুলির ইন্টার‍্যাকশনের কারনে। হিগস কোথায় পাওয়া যায়? সব খানে। মহাবিশ্বময় হিগস ফিল্ড ছড়িয়ে আছে। এর সাথে যেই কণা যেভাবে ইন্টার‍্যাক্ট করে, তার ভর ঠিক সেরকম। যেমন হিগসের সাথে ইলেক্ট্রন হাল্কা ভাবে ইন্টের‍্যাক্ট করে। তাই ইলেক্ট্রনের ভর কম (0.5 MeV). MeV হল মেগাইলেক্ট্রনভোল্ট। পার্টিকেল ফিজিক্সে সাধারণত MeV এবং GeV (গিগাইলেক্ট্রনভোল্ট) – এককে ভর মাপা হয়। ভরের কথায় ফিরি। ওদিকে টপ কোয়ার্কের ভর ইলেক্ট্রনের তুলনায় অনেক বেশি। প্রায় 172 GeV. এটার কারন হল, টপ কোয়ার্ক হিগসের সাথে বেশি ইন্টের‍্যাক্ট করে। আবার ফোটন হিগস ফিল্ডের সাথে ইন্টের‍্যাক্ট করেইনা। তাই তার ভর নেই (আপাতত কথাটা হজম করে নিন। তবে ফোটন ইজ ম্যাসলেস – এভাবে বলার অধিকার আসলে আমাদের নেই) । আসল কথা হল, যেই ফিল্ডের সাথে (বা পার্টিকেলের সাথে) যেকোন কণা ইন্টার‍্যাক্ট করে ভারি হয়, সেই ফিল্ডের নাম রাখা হয়েছে হিগস ফিল্ড, এবং পার্টিকেলটির নাম হিগস বোসন।

কন্সেপ্টটা আরো সহজ করে বলি। ধরাযাক একটা মাঠে বর্গমূলের সব সদস্য বসে আছে। সেখান দিয়ে হঠাত যদি সাকিব আল হাসান হেঁটে যান, তাহলে সবাই তাকে ছেঁকে ধরবে। হ্যান্ডশেক করবে, ছবি তুলবে, অটোগ্রাফ চাইবে। সবাই ইন্টার‍্যাক্ট করার চেষ্টা করবে। তাই তার ওই যায়গাটুকু পেরোতে সময় লাগবে। কিন্তু সেখান দিয়ে যদি একজন ভিক্ষুক হেঁটে যান, তার সাথে তেমন কেউ কথাও বলবেনা। সে কোন ইন্টার‍্যাকশন ছাড়াই জায়গাটা পেরিয়ে যাবে। তাই ভিক্ষুকের মাঠ পেরোতে যত সময় লাগবে, ক্রিকেটার সাকিবের তারচে’ অনেক বেশি সময় লাগবে। এবার মাঠের প্রত্যেকটা মানুষকে  হিগস বোসন, মাঠের জনতাকে হিগস ফিল্ড, ভিক্ষুককে ফোটন, আর ক্রিকেটার সাকিব কে টপ কোয়ার্ক হিসেবে কল্পনা করা যাক। নিচের এ্যানিমেশনটি দেখুন।

 

HiggsAnimGalib

 

 

এবার বলুন কে ভারি আর কে হালকা। হিগস বোসনের রহস্য কি এখন হাতের মুঠোয় না?

কিন্তু ব্যাপারটা যত সহজে বললাম, মোটেই এত সহজ না। চিন্তে নেই। ধীরে ধীরে শিখব আমরা। এবার হিগসের ইম্পর্টেন্সটা নিশ্চয়ই বুঝতে পাচ্ছেন? এখন পর্যন্ত পার্টিকেল ফিজিক্সে সবচে’ গ্রহনযোগ্য মডেল হচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড মডেল। হিগসই এই মডেলে ভরের কারন ব্যাখ্যা করে । হিগস যদি না পাওয়া যায়, তাহলে ভরের ব্যাখ্যা কী? আপাতত ব্যাখ্যা  নেই। তাই যদি হয়, তাহলে এই মডেলের কপালে বিরাট মডিফিকেশন অপেক্ষা করছে। সব আবার হয়ত ঢেলে সাজাতে হবে।

একটা জিনিস জানানো দরকার। প্রোটন বা এধরনের কম্পজিট পার্টিকেল গুলো কিন্তু সরাসরি হিগস ফিল্ডের সাথে এভাবে ইন্টার‍্যাক্ট করেনা।  আমরা জানি, প্রোটন কোন মৌলিক কণিকা নয়। দুটো আপ কোয়ার্ক আর একটা ডাউন কোয়ার্ক – এই তিনটি কোয়ার্ক নিয়ে প্রোটন তৈরি হয়। ওদিকে আপ কোয়ার্কের ভর 2.3 MeV  এবং ডাউন কোয়ার্কের ভর 4.8 MeV. তাহলে প্রোটনের ভর হবার কথা  2 x 2.3 + 4.8 = 9.4 MeV এর কাছাকাছি। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। প্রোটন আরো ভারি। তার ভর প্রায় 938 MeV -এর মত। কিন্তু এই এক্সট্রা ভর কথাথেকে এলো? এই ভর আসলে আসে স্ট্রং ইন্টার‍্যাকশনের কারনে। মানে ওই যে “নিক্লিয়সবলবল” আরকি। এই গল্পও বিরাট। পরে সময় পেলে করব।

 

 

পরের কথা পরের পোস্টে।

ভাল থাকবেন।

: -)

 

Galib Hassan
Author: Galib Hassan

Mischief Managed.. 😉

Permanent link to this article: https://www.borgomul.com/kada-mati/1199/


মন্তব্য করুন আপনার ফেসবুক প্রোফাইল ব্যবহার করে

1 comments

  1. ভালো লাগল। কনসেপ্ট ক্লিয়ার হচ্ছে। 🙂

মন্তব্য করুন