Actuary As A Profession

-তা বাপু তুমি করডা কি? বিসিএস টিসিএস বা ব্যাংকের চাকরির চেষ্টা করো?

-জী আমি Actuarial Science এ Partly Qualified হয়ে অমুক ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে Actuarial Department এ জয়েন করেছি।

-অ তাই নাকি। তা এতদিন পড়াশোনা কইরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পইড়া শেষ মেস তুমি কিনা মাইনশের কাছে ঘুইরা ঘুইরা ইন্সুরেন্স বেঁচো?

-না এসব কিছু না। অ্যাকচুয়ারি ভিন্ন জিনিস, ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে চাকরী করলেই সে মানুষ কে ভুজুং ভাজুং দিয়ে ইন্সুরেন্স পলিসি করাবে ব্যাপারটা এমন না।

-তাইলে কি ?

– সে কথা আপনি বুঝতে চাইলে চেষ্টা করা যেতে পারে। কিন্তু আপনার বুঝার চেষ্টা, ইচ্ছা বা সামর্থ আছে কিনা সেটা অগ্রগণ্য !!

 

উপরের কথপোকথন কাল্পনিক কিন্তু বাস্তবতার সাথে কিছু মিল আছে। তারই নিরিখে আজকের এই লেখা।  অনেক দিন পর লিখছি। স্বাভাবিক ভাবেই জড়তা কাজ করছে। কিভাবে কোথা থেকে শুরু করবো বুঝতে পারছি না। যাই হোক, আজ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করবো Actuarial Science এর কিছু ফিল্ড এবং এর কাজের পরিধি। অ্যাকচুরিয়াল সায়েন্স  কি সে বিষয় যদি সামান্য জানা থাকে তাইলেই কেবল এই গপ্প।

actuarialx-about_page_image-318x210অ্যাকচুয়ারিগণ যেসব ক্ষেত্রে কাজ করেনঃ

লাইফ, জেনারেল, হেলথ ইন্সুরেন্স এবং রিইন্সুরেন্স

সাধারণত অ্যাকচুয়ারিরা লাইফ ইন্সুরেন্সেই বেশি জড়িত কিন্তু জেনারেল, হেলথ ইন্সুরেন্স, রিইন্সুরেন্স ইত্যাদি ক্ষেত্রে তারা  সমান ভাবে  কাজ করে থাকেন। এসব ক্ষেত্রে তারা যা করেনঃ

  • প্রোডাক্ট ডিজাইনঃ এক্ষেত্রে পুরোনো যে প্যাকেজ বা প্রোডাক্ট আছে সেগুলোর পরিবর্তে নতুন কি প্যাকেজ ডিজাইন করা যায়, কি কি অফার কাস্টমারদের দিলে তারা পূর্বের তুলনায় বেশি ইন্সুরেন্স করতে আগ্রহী হবে এসব নির্ধারণ।
  • প্রিমিয়াম নির্ধারণ,  শেয়ার হোল্ডার এবং পলিসি হোল্ডারদের মধ্যে প্রফিট ডিষ্ট্রিবিউশন কিভাবে হবে তা নির্ধারণ করা।
  • কোম্পানির ফাইন্যান্সিয়াল ডিসিশন গুলো অ্যাকচুয়ারিগণ অন্যান্য ম্যানেজমেন্টের তুলনায় অনেক সুশৃংখল ও কৌশল অবলম্বন করে থাকেন।
  • ডেভিডেন্ট অ্যানাউন্সমেন্ট
  • রিইন্সুরেন্স মোডিফিকেশন

পেনশন ফান্ড

বাংলাদেশে সম্প্রতি ইন্সুরেন্স ডেভলপমেন্ট এন্ড রেগুলেটরি অথরিটি  পুনর্গঠিত হচ্ছে। ২০১০ সালে এটা প্রতিষ্ঠিত হয় কিন্তু সংস্থা ও সরকারের মধ্যে লোকবল নিয়োগ সংক্রান্ত ঝামেলার কারণে এতদিন এটি নির্জীব অবস্থায় ছিলো। ২৯ জুলাই ২০১৬ তারিখ অর্থ মন্ত্রনালয় নতুন ভাবে এটি পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটি শক্তিশালী হলে বাংলাদেশের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই পেনশন ফান্ড বাধ্যতামূলক করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে অ্যাকচুয়ারিদের বিকল্প নেই।

  • actuarial-scienceকর্মকর্তা কর্মচারিদের অতীত ও বর্তমান কাজের মুল্যায়ন করে পেনশন স্কিম তৈরী করা।
  • কোম্পানির বর্তমান অ্যাসেট ভবিষ্যৎ লায়াবিলিটি পূরণ করতে পারবে কিনা তা নির্ধারণ করা
  • ইন্টারেষ্ট রেট পরিবর্তনের সাথে সাথে কোম্পানির ইমুনাইজেশন পাওয়ার আছে কিনা তা নির্ধারণ করা।
  • ক্ষেত্র বিশেষে কোম্পানির একীভুতকরণের সময় পেনশন মূল্য নির্ধারণ।

ইনভেষ্টমেন্ট

  • মার্কেটে যেসব ইনভেষ্টমেন্ট আছে তার রিটার্ণ এবং রিটার্ণের রিস্ক নির্ধারণ করা
  • বর্তমানের খরচ ও ভবিষ্যতের ক্যাশফ্লো ( কোন প্রজেক্টে যে টাকা পয়সা যাওয়া আসা করে তাই ক্যাশফ্লো)  ইন্টারেষ্ট রেট ও মুল্যস্ফীতি ( ইনফ্লেশন) পরিবর্তনে কিভাবে প্রভাবিত হতে পারে এসব নির্ধারণ।
  • সিকিউরিটি/ স্টক থেকে রিটার্ণ ম্যাক্সিমাইজিং স্ট্র্যাটেজি নির্ধারণ
  • ফান্ড ম্যানেজমেন্ট
  • প্রোবাবিলিটি এবং ইকোনোমিক্স থিওরি ব্যাবহার করে ভবিষ্যৎ লাভ/লস এসব নির্ধারণ। অথবা লাভ হলে কত হবে বা লস হলে কত হবে এসব। প্রফিট ম্যাক্সিমাইজেশন এবং লস মিনিমাইজেশন।

গভর্ণমেন্টের কি কি কাজে লাগতে পারে

  • জনসংখ্যা অভিক্ষেপ, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করি ভবিষ্যতের জনসংখ্যা নির্ধারণ এবং সে অনুযায়ী সরকারকে পূর্বপ্রস্তুতি নিতে বলা
  • রাষ্ট্রীয় পেনশন স্কিম নির্ধারণ
  • অঞ্চল ভেদে মানুষের ভৌগলিক, অর্থনৈতিক, লাইফ স্টাইল, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, বেকারত্ব ইত্যাদি  পার্থক্য নির্ণয় করে তা দূর করার উপায় বের করা
  • রাষ্ট্রীয় সকল ইন্সুরেন্স, ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রন করা
  • ফাইন্যান্সিয়াল প্ল্যানিং, বাজেট অ্যানালাইসিস

কন্সাল্টেন্সি এবং রিস্ক ম্যানেজমেন্ট

  • ম্যাথেমেটিকাল মডেল তৈরী করে ট্রেডিং স্ট্র্যাটেজি আবিষ্কার করা।
  • স্টক মার্কেটের নতুন পরিবেশে আগের মডেল গুলো সংগতি পূর্ণ কিনা তা বের করা
  • অন্যান্য যে ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলো রয়েছে  তাঁরা অন্যান্য কোম্পানিকে লোন দিবে কিনা, দিলেও কিভাবে দিবে এসব নির্ধারণ।

আরো অনেক ক্ষেত্র আছে। আজ আর লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে না। অন্য একদিন লিখব। আমাদের দেশে অ্যাকচুরিয়াল সায়েন্স/প্রফেশন এখনো ভ্রুন পর্যায়ে আছে। পরিপূর্ণ হতে বা বিকশিত হতে আরো অনেক সময় লাগবে। বর্তমানে শুধু ইন্সুরেন্স সেক্টর গুলোতেই অ্যাকচুয়ারি লাগে। তবে আশার বানি হচ্ছে, পশ্চিমের বাতাস যেহেতু আমাদের একটু দেরিতে লাগে অতএব তাদের মত আমাদেরও অন্যান্য সেক্টরে অ্যাকচুয়ারি লাগবে।  লেট ইট গ্রো।

 

তথ্যসুত্রঃ

  1. Insurology.in
  2. IDRA

 

 

Permanent link to this article: https://www.borgomul.com/rafiq/4325/


মন্তব্য করুন আপনার ফেসবুক প্রোফাইল ব্যবহার করে

2 comments

  1. ভাই আপনের কী কী করা লাগছে সেইগুলা নিয়া লেখেন। কীভাবে কীভাবে পড়া লাগতেছে এইসব।
    আরেকটা কথা, ছিকন পিনের চারজার আছে?

  2. হা হা হা … তুই বদমাইশ ভালো হবি না?

    আমার কাজ এক নম্বর পয়েন্টের গুলো।

মন্তব্য করুন