গিনিপিগ! নাম শুনেই অনেকে মনে করেন যে শূকরের সাথে হইয়তো কোন যোগসূত্র রয়েছে। কিন্তু এরা শুকর ও না আবার গিনির সাথেও এর কোন সম্পর্ক নেই। অনেকে একে ইঁদুর মনে করেন। দেখতে অনেকটা ইদুরের মত হলেও এটি ইদুরের চেয়ে বড় এবং এর কোন লেজ নেই, আর ইদুরের সাথে এর কোন সম্পর্ক ও নেই। গিনপিগের (Guinea Pig ) বৈজ্ঞানিক নাম ।এর আদি বাসস্থান আন্দেস পর্বত মালা। কিন্তু এখন প্রায় সব জায়গাতেই পাওয়া যায় তবে বুনো হিসেবে নয় পোষা প্রানি হিসেবে। পোষা প্রানী হসেবে বিশ্বে গিনিপিগের দারুন কদর রয়েছে। যদিও বাংলাদেশের অনেকেই এদের ঠিক ভাবে চিনেন ও না।
ক্রয়ঃ যে কোন পোষা প্রানীর গুরুত্বপুর্ন ধাপ টি হচ্ছে ক্রয় ধাপ। এসময় আপনি যদি অসুস্থ কিংবা বকলাঙ্গ প্রানী কিনেন তাহলে সেটা আপনার প্রানী পোষার আগ্রহকেই ধ্বংস করে দিবে। গিনিপিগ কেনার সময় গিনিপিগের মুখ এবং তার পা দেখে কিনতে হয়। মুখে এবং পায়ে যদি কোন ক্ষত না থাকে তাহলে আপনি ধরে নিতে পারেন যে গিনিপিগটি সুস্থ আছে। ৫-১০ মিনিট গিনিপিগের সামনে দাঁড়িয়ে তার গতি বিধি পর্যবেক্ষন করলে আরও নিশ্চিত হওয়া যায়। বাংলাদেশে সাধারণত কালো সাদা এবং বাদামী রঙের মিশ্রনের গিনিপিগ পাওয়া যায়।
কোথা হতে ক্রয় করবেনঃ বাংলাদেশে যেহেতু এখনও গিনিপিগ জনপ্রিয় হয় নাই তাই সব জায়গায় পাওয়াও যায় না। কাটাবনে দুই একটি দোকানে পেতে পারেন তবে দাম অনেক বেশি। যারা নিয়মিত পালেন এবং কিছু অনলাইন শপ আছে সেখানে কমে পাওয়া যায়।
খাচাঃ গিনিপিগের জন্য যেই খাচা দরকার সেটি বাংলাদেশে নেই। তবে সেই খাচা দেখতে সুন্দর হলেও পরিষ্কার করা যথেষ্ট কষ্ট সাধ্য ব্যাপার। সাধারন পাখির খাঁচায়ও গিনিপিগ পালা যায়। খাচায় শুধু এক টুকরো বোর্ড দিলেই হয় যেন তারা সেখানে বিশ্রাম নিতে পারে। তবে সারাদিন খাচায় না রেখে মাঝে মাঝে ছেড়ে দেয়াটা উত্তম ।
খাবারঃ গিনপিগ ভেজিটেরিয়ান। সন ধরনের শাক সবজি ই খায়। তবে নিয়মিত খাবার হিসেবে ভুষি , ভাত আর কলমি শাক দিতে পারেন। সবুজ ঘাস এদের খুব ই প্রিয় খাবার। তবে যে সকল খাবার এদের একদম এ দেয়া যাবে না তা হল – বাধা কপি, ফুলকপি , আলু, বাদাম, যে কোন ডেইরী খাবার। শীত কালে ভাত না দেয়াই উত্তম।
ব্রিডিংঃ গিনিপিগ খুব দ্রুতই প্রজনন ক্ষমতা অর্জন করে। এদের ব্রিডিং হার ও অনেক, এক সাথে ৪-৬ টি বাচ্চা দিয়ে থাকে। আর বাচ্চা গুলো জন্মের ২-৩ মিনিটের মধ্যে দোড়ানো চলাফেরা শুরু করে। তাই কেনার সময় জোড়া না কিনাই ভালো। হয় দুটোই ছেলে অথবা দুটোই মেয়ে কিনা উচিত।
পোষ মানানোঃ এরা খুব সহজেই পোষ মানে। এদের নাম ধরে ডাকলে এরা সাড়া দেয়। এরা চোখে কম দেখে কিন্তু ঘ্রান শক্তি প্রখর। আপনাকে না দেখেও আপনার গায়ের গন্ধ পেলেই টের পেয়ে যাবে আপনার উপস্তিতি। এরা খুব সুন্দর কুই কুই শব্দ করতে পারে। ক্ষুধার্ত অবস্থা ছাড়া কিংবা আপনাকে দেখা ছাড়া এরা তেমন একটা ডাকা ডাকি করবে না ।পোষ মানানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত তাদের সময় দিতে হবে। আপনার হাত থেকে খাওয়াতে হবে। ভয়ের কোন কারণ নেই এরা কামড় দেয় না , যদি না আপনার হাত কে খাদ্য ভেবে বসে। এদের বর্জ্য তে তেমন কোন গন্ধ নেই তাই সহজেই এক জোড়া গিনিপিগ আপনার বারান্দায় শোভা পেতে পারে।
1 comment
অনেক ধন্যবাদ