ম্যাথেমেটিকাঃ যাদের কাছে বিভীষিকা

প্রথম বর্ষে আসার পরে অন্য অনেকের মত আমিও ল্যাব নিয়ে যথেষ্ট ঝামেলায় পড়েছিলাম। তবে সেটি কীভাবে কাটিয়ে উঠলাম সেটা মনে হয় শেয়ার করে ফেলাই ভালো, আরো অনেকে কাটিয়ে উঠতে পারবে তাদের ঝামেলাগুলো।

প্রথমেই আমাদের ল্যাবের কম্পিউটার। কোন এক বিচিত্র কারণে ল্যাবে পাইরেটেড উইন্ডোজ ৭ ব্যবহার করা হলেও সেখানে উইন্ডোজ ৯৮ এর theme দেয়া থাকে। সেগুলো কোন ব্যাপার না, নিজেরাই চেঞ্জ করে নেয়া যায়। যাই হোক কম্পিউটার নিয়ে কোন অভিযোগ নাই, কারণ কম্পিউটারের দক্ষতা ব্যবহারকারীর উপরে নির্ভর করে, তাই ব্যবহারকারীদের দিকেই আসা যাক।

আমাদের অনেক শিক্ষার্থীই ল্যাবে এসে জীবনে প্রথমবারের মত কম্পিউটার স্পর্শ করে। তবে আমাদের ম্যাথমেটিকা প্রোগ্রামিংয়ের ক্ষেত্রে তাদের অবস্থা যে কম্পিউটারের সাথে পরিচিতদের চাইতে খুব ভালো থাকে তা বলা যাবে না 😀 । আমার মতে যারা প্রথমবারের মত কম্পিউটার ব্যবহার করে ভার্সিটিতে উঠে, তারা শুধুমাত্র কম্পিউটার অন-অফ আর ফাইল সেভ করতে শিখলেই ম্যাথমেটিকা প্রোগ্রামিং শেখার জন্যে তৈরি হয়ে যাবে। সেটুকু শিখে নিতে হবে নিজের প্রয়োজনে, নাহলে … নাহ, কোন বর্ণনা পাচ্ছি না।

এবারে আসি, যারা উপরের কাজগুলো জানে। ল্যাবে প্রথম ক্লাসে গেলেই স্যারেরা Schaum সিরিজের ম্যাথেমেটিকা বইটি কেনার কথা বলে দেন। বইটা ভালো, অন্তত আমার কাছে ভালো লেগেছে। আমাদের প্রথম সমস্যা হলো আমরা ভেবে বসে থাকি কম্পিউটারে আমরা অল্প কিছু টাইপ করবো এবং কম্পিউটার আমাদের সুড়সুড় করে ফলাফল দিয়ে দিবে। আপু/ভাইয়া, ভুলে যান সেই চিন্তা। এইটা হিসাব নিকাশের কাজ, আপনার মেশিন ততটাই খাটবে আপনি নিজে যতটা খাটাতে পারবেন। সিনেমার মত প্লে করে দিয়ে আরামে বসে থাকবেন সেটি এখানে কাজে দিচ্ছে না। কাজেই আমাদের প্রথমে এটা মেনে নিতে হবে যে আমাদেরকে কষ্ট করে এই বইটা পড়ে দেখতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় আমরা যদি help browserএ গিয়ে The Mathematica Bookটা পড়ে নিতে পারি। এক রাতেই শেষ করার কথা বলছি না, রয়েসয়ে এগোনোটাই আমার কাছে উত্তম।

প্রথম টাস্কঃ কষ্ট করে বই পড়তে হবে।

কাজটা যেহেতু কম্পিউটারের, কম্পিউটারের সাথেও আমাদের পরিচিত হতে হবে। তার আগে আরেকটি কাজ, ম্যাথেমেটিকা প্রোগ্রামটা কীভাবে কাজ করে সেটি একটূ জেনে নেয়া ভালো। এক লাইনে বলা যায় এটি বিভিন্ন ছোট-খাট এবং বড়সড় হিসাব করতে পারে (গ্রাফ প্লট করাও কিন্তু এক ধরণের হিসাব) । কাজেই প্রোগ্রামারের প্রধান কাজ হলো একটা সমস্যাকে সেই পরিমাণ ছোট ছোট হিসাবে ভাগ করে নেয়া যে পরিমাণ ম্যাথেমেটিকা নিতে পারে। সে তত ভালো প্রোগ্রামার, যে সমস্যাটিকে সবচেয়ে কম ভাগ করে কম্পিউটারকে দিয়ে কাজটি করিয়ে নিতে পারে। পরে কেউ মনে করিয়ে দিলে আমি স্ক্রিনশটসহ উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দিবো। কাজেই কম্পিউটারে যাবার আগে আমাদেরকে আরেকটা জিনিস জানতে হবে, ম্যাথেমেটিকা কোন কোন হিসাব করতে পারে এবং আমি আমার সমস্যাকে কীভাবে ভাগ করলে ম্যাথেমেটিকা আমাকে সেটি সমাধান করে দিবে। তারপরে জেনে নিতে হবে সেসব হিসাব করতে কী টাইপ করা লাগে। যা টাইপ করতে হয় সেটাকে বলে কমান্ড।

টাস্ক দুইঃ সমস্যাকে ভাগ করা, কমান্ডগুলো জেনে নেয়া।

তারপরে আর কিছু না, সমস্যা অনুযায়ী ম্যাথেমেটিকাতে কমান্ড বসিয়ে Shift+Enter চাপলেই হয়ে যাবে 😀 ।

মূল কথা হলো, সমস্যাটাকে নিজে নিজে সমাধান করে ম্যাথেমেটিকাতে হিসাব করতে হবে। আমরা মাঝে মাঝে ভুলে যাই যে কম্পিউটার আমাদের হিসাবকারীমাত্র, সমস্যার সমাধান করতে হবে নিজেদেরই। উপায় বলে দিলে ম্যাথেমেটিকা হিসাব করে দিবে, এর বাইরে কিছু করার ক্ষমতাও নেই।

সবার ক্রিটিকাল পয়েন্টে সেকেন্ড ডিফারেনশিয়াল নেগেটিভ হোক।

জুনায়েদ নিবিড়
Author: জুনায়েদ নিবিড়

আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই

Permanent link to this article: https://www.borgomul.com/nibir2738/3345/


মন্তব্য করুন আপনার ফেসবুক প্রোফাইল ব্যবহার করে

15 comments

Skip to comment form

  1. সুন্দর 🙂

    1. 😀

  2. বেসিক দরকার। ভালো লেখা।

    1. ধন্যবাদ

  3. আপনার মেশিন ততটাই খাটবে আপনি নিজে যতটা খাটাতে পারবেন (y)

    1. 😀

  4. আমি নিজেও দেখেছি ম্যাথমেটিকাকে অনেকে ভয় পায়। হেল্প ব্রাউজার আর বইয়ের একটু সাহায্য নিলেই এটা ক্যালকুলেটরের মতই সহজ হয়ে যায়।

    কাজেই প্রোগ্রামারের প্রধান কাজ হলো একটা সমস্যাকে সেই পরিমাণ ছোট ছোট হিসাবে ভাগ করে নেয়া যে পরিমাণ ম্যাথেমেটিকা নিতে পারে।

    অনেক সহজ করে লেখাটা ভালো লাগল। স্ক্রীনশট বুঝিয়ে দিলে ব্যাপারটা অনেকের কাছে ক্লিয়ার হয়ে যাবে।

    1. ভাই, লেখাটাকে বিভিন্ন প্রোগ্রামের স্ক্রীনশটসহ আরো বড় করবো। কিন্তু আমার অ্যাসাইনমেন্ট হারানোয় আর কারো কাছ থেকে সেগুলো এনে উদাহরণ দিতে হবে। সেটা এই উইকএন্ডেই করে ফেলবো আশা রাখি।

  5. ম্যাথম্যাটিকা নিয়ে সিরিজ পোস্ট চাই

    1. অন্য কোর্সগুলো লিখে নিই, পরে আবার ম্যাথেমেটিকায় ফেরত আসা যাবে। মূল সমস্যা হলো আমি নিজেও এইটা নিয়ে পরীক্ষায় যা লাগে এর বাইরে কিছু জানি না।

      1. এখানে আবার আমার হস্তক্ষেপ পড়ল। কাউকে জানতে দিবি না যে তুই জানিস না 😀
        অবশ্য আমি কিন্তু এখন ভালই জানি। 😀 আমার দুনিয়া আর নয় পড়লে পরে ওখানে যে ভিডিওগুলো আছে সেটা কিন্তু ম্যাথমেটিকা দিয়ে করা।

        https://www.youtube.com/watch?v=U_PDIZu8Gcs (Internal Convergence)

        https://www.youtube.com/watch?v=4sSLKxMmbwI (External Convergence)

  6. সবার ক্রিটিকাল পয়েন্টে সেকেন্ড
    ডিফারেনশিয়াল নেগেটিভ হোক।

    লাইক
    ভালো লিখেছিস

    1. 😀

  7. লেখাটা ভালোই হইসে, কিন্তু কিছু কথা আছে।

    সবাই পড়লে কথা নাই, কিন্তু সবাই না পড়লে ২ খান কথা আছে। সবাই (ইনক্লুডিং ইউরস ট্রুলি) কিন্তু পড়তে চান না।

    অ্যাপ্লিকেশান দেখে ভাল লাগলে ভাল। ভাল না লাগলে ২ খান কথা আছে।

    কারো কি ম্যাথেম্যাটিকা ভালো লাগে (আমার নিজের ছাড়া)? মনে তো হয় না, কারণ প্রথমেই মানুষ চিন্তা করবে এটা কি খাবো না মাথায় দিবো? তাদের ধারনাটা পরিষ্কার কইরা দাও। তারপরও দেখবা কাজ হচ্ছে না। তখন লিখতে পারবা “কয়লা ধুইলে ময়লা যায় না”।

    বুঝলা কিছু? ক্রিটিক্যাল পয়েন্টে সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল কত হবে সেটা ইকুয়েশনের ডিগ্রীর উপরে নির্ভর করে। কত ডিগ্রীর ইকুয়েশন নিয়েছ? 😀

    1. সেকেন্ড ডিফারেনশিয়ালের কথা বাদ দেন … কিন্তু উপরের কোনটারই ‘দুইখান কথা’ বুঝি নাই

Leave a Reply to Awnon Bhowmik Cancel reply