ভাবছিলাম প্রথম লেখাটা কি নিয়ে দেওয়া যায়। অনেকগুলোই মাথায় এল, কিন্তু খটোমটো কিছু নিয়ে লেখার মত দম পাচ্ছিনা। তাই LaTeX দিয়ে শুরু করে ফেলি। স্ট্রিক্টলি গণিতও না, আবার গণিতের বাইরেও না। এটা শিখতে গিয়ে আমার যে কী যুদ্ধজয় করতে হয়েছিল, সেটা নাহয় না লিখলাম। শিখে ফেলার পর এটা তুচ্ছ ঠিকই । কিন্তু শেখার আগে.. ওরে বাবা। হালুম! বিশেষ করে যদি কোন উচ্চমার্গীয় থিওরিস্টের কাছে শিখতে যান, কিম্বা উচ্চমার্গীয় বই থেকে, তাহলে তো কথাই নেই! তারচে আসেন ভাই। আমরা আমজনতা। যতটা সহজে পারি শিখে ফেলি। কিছু কাজ অবশ্য অন্ধের মত করতে হবে এই মুহুর্তে। পরের পোস্ট গুলোতে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে আশা করি।
তার আগে বলি, LaTeX কেন দরকার। Microsoft Word দিয়ে তো দিব্যি ম্যাথ টাইপিং-এর কাজ চলে যায়। LaTeX দিয়ে কি হবে? প্রথম কথা হল, Microsoft Office বস্তুটি ফ্রী না। এটার ২০১৩ সালের প্রফেসনাল রিলিজের দাম 499.99 ডলার।
৪০ হাজার থেকে কিছু বেশি। 🙁 আমরা কিনি ৫০টাকার ডিভিডিতে। কী দরকার, ভাই ক্রিমিনালের খাতায় নাম লেখানোর। পাইরেসি তো একধরনের চুরি (অবশ্য সারাক্ষনই সেটা করে চলেছি) ! তারচে প্রতি মুহুর্তে পাইরেটেড সফটওয়্যার ইউজ না করে আসেন, LaTeX ইউজ করি। এটা সম্পুর্ণ ফ্রী! দ্বিতীয় কথা হল, আমরা যখন জার্নাল বা কনফারেন্সের জন্য পেপার লিখি, তখন MS Word একটা বিরাট পেইন। আমরা ভুক্তভোগীরা জানি। সবচে ইম্পর্টেন্ট দিকটা হল, ইকুয়েশনের রেফেরেন্সিং এবং বিব্লিওগ্রাফি তৈরি। ধরা যাক আমরা কোন প্যারায় লিখলাম, “২ নং চ্যাপ্টারের ৫ নং ইকুয়েশনে লেখা আছে.. ব্লা ব্লা ব্লা”। ভাল কথা। কিছুখন পর মনে হল, আরেকটা ইকুয়েশন ঢোকানো দরকার। আপনি চ্যাপ্টার-২ এর প্রথমেই একটা ইকুয়েশন ঢুকিয়ে দিলেন। তাহলে ৫ নং ইকুয়েশনটা হয়ে গেল ৬ নং। এখন, বিরাট পেপারের মধ্যে আপনি যেখানে যেখানে ৫ নং ইকুয়েশন নিয়ে গল্প করেছেন, সেই সব জায়গায় খুঁজে খুঁজে কি আপনি ওটাকে বদলে ৬ নং বানাবেন? হাতে ধরে ধরে? কি ভয়ানক! LaTeX-এ এই কষ্টটা করারই দরকার নাই। এটা তার উপর ছেড়ে দিয়ে আমরা ইচ্ছেমত মুড়ি খেতে পারি। সে নিজেই এসব ঠিক করে নেবে। প্রশ্ন হল, এই অটোম্যাটিক রেফারেন্সিং এর ব্যাপারটা কি MS Word -এ করা যায়না? যায়। কিন্তু এটা নিয়ে অনেকের কমপ্লেইন। অনেকের নাকি ফাইল ক্র্যাশ করে, এই হয় সেই হয়..! এমন আরো অনেক ইস্যু আছে।
যাহোক, আপাতত MS Word -এর সাথে ঝগড়া বাদ থাকুক। একেবারে গোড়ার কাজ গুলো এই পোস্টে শুরু করে ফেলি!
১. প্রথমে http://miktex.org/download -এই ওয়েবসাইটে গিয়ে MikTeX ডাউনলোড করেন। এটা সম্পূর্ণ ফ্রী সফটওয়্যার।
ডাউনলোড শেষে MikTeX ইন্সটল করে ফেলেন। স্টেপ গুলো এইরকমঃ
প্রথম ধাপে “I accept the MikTeX copying conditions” -এ টিক দিয়ে নেক্সট.. নেক্সট.. চালিয়ে যান, ইন্সটল হয়ে যাবে।
২. এরপর http://www.xm1math.net/texmaker/download.html#windows -এখান থেকে TeXmaker ডাউনলোড করে একই ভাবে ইন্সটল করে ফেলেন। ইন্সটলেশন স্টেপ গুলো এরকমঃ
TeXmaker ডাউনলোড করা ম্যান্ডেটরী না। তবে কাজ করতে গেলে বোঝা যায় এটাতে LaTeX লেখা কতটা সহজ।
৩. এরপর উইন্ডোজ ইউজাররা স্টার্টমেনু থেকে Texmaker ওপেন করেন। এরকম কিছু একটা জিনিসের ছবি দেখা যাবে।
লিনাক্স বা ম্যাক ইউজার রা কি করবেন বলতে পারিনা। ওনারা Kile -এ লেখেন। 🙁
৪. এরপর ফাইল মেনু থেকে New-তে ক্লিক করেন বা Ctrl+N চাপ দেন। একটা নতুন ফাইল ওপেন হবে।
৫. এখন Texmaker-এর ডানদিকের উইন্ডোতে কয়েকটা লাইন লিখে ফ্যালেনঃ
\documentclass[11pt]{article}
\begin{document}
\end{document}
এই \begin{document} আর \end{document}-এর মাঝখানে যা লিখবেন, তাই হবে আপনার pdf আউটপুট। লিখে দেখেন যা খুশি আজাইরা-বাজাইরা। ধরা যাক, আমি ওয়ার্ড্স্ওয়ার্থের কয়েকটা লাইন লিখলামঃ
\begin{document}
For
oft when on my couch I lie, in
vacant or in pensive mode, they
flash upon that inward eye, which
is the bliss of solitude, and
then my heart with pleasure fills, and
dances with the daffodils.
\end{document}
ছবিতে দেখা যাবে এরকমঃ
৬. এবার একটা নাম দিয়ে ফাইলটা একটা নতুন ফোল্ডারে save করেন। save না করলে pdf তৈরি করা যাবেনা। ধরাযাক save করার সময় আপনি ফাইলের নাম দিলেন ajaira.tex. (নতুন ফোল্ডারে save করতে বললাম, কারন, এই ajaira.tex এর বেশ কিছু বাচ্চা কাচ্চা জন্মাবে শিগগিরি)।
৭. এবার কীবোর্ডে F1 চাপ দেন। কিছুক্ষন সময় নিয়ে এরকম দেখতে একটা উইন্ডো ওপেন হবেঃ
আপনি আসলে অলরেডি একটা pdf তৈরি করে ফেলেছেন। যেই ফোল্ডারটাতে ajaira.tex ফাইলটা save করেছিলেন, ওটাতে ঢুকে দ্যাখেন, পাঁচটা কাচ্চাবাচ্চা ফাইল তৈরি হয়ে বসে আছে। এর মধ্যে একটার নাম ajaira.pdf । এটাই হচ্ছে সেই pdf যেটা আপনি এতক্ষন থেকে জেনারেট করলেন।
পরের পোস্টে এই ajaira.tex ফাইলটাকে কাটাছেঁড়া করেই LaTeX-এ ম্যাথম্যাটিক্স লেখা শিখব। আপাতত ঘুমিয়ে পড়ছি। ঘুমানোর আগে আরেকটা কথা বলে যাই। LaTeX উচ্চারণটা কিন্তু যদ্দুর জানি, লেটেক্স না। লেটেক। শেষের এক্স‘টা আসলে কাই। গ্রীক অক্ষর। ওইযে কাই-স্কয়্যার ডিস্ট্রিবিউশন আছেনা? সেই কাই।
: -)
এই টিউটোরিয়ালের যত পোস্ট
১ ২ ৩
9 comments
Skip to comment form
ভালো লাগল। Latex/ল্যাটেক নিয়ে জানার ইচ্ছা ছিলো। আশা করি ল্যাটেক ব্যবহার করা শিখে ফেলতে পারব। আর শেষদিকে নামের উচ্চারণের ব্যাখ্যাটা আরও ভালো লাগছে।
Author
ei post tao to be continued. thanks Reza! 🙂
osthir
Author
অস্থিরতার সংজ্ঞা বল দেখি? 😀
যাহা স্থির নয় তাহাই অস্থির
আরে আমি নিজেও লেটেক্স উচ্চারণ করতাম। ধন্যবাদ। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় ।
Author
হাহা। আমি নিজেও তাই উচ্চারন করতাম এক সময়।
তুমি গুরু ভাল।
বাই দ্যা ওয়ে, অস্থিরতার সংজ্ঞা-টা দাও।
Author
অস্থিরতার সংজ্ঞা আমাকে যেই গুরু শিখাইসিলো, তারেই দাওয়ার অনুরোধ করতেসি!
গুড আইডিয়া! new question হইতে পারে!!