কিভাবে একটি সুন্দর প্রেজেন্টেশন দেয়া সম্ভব ??

আমরা অনেকেই অনেক মানুষের  সামনে কথা বলতে ভয়/লজ্জা পাই। অনেক সুন্দর গল্প একটি সুন্দর প্রেজেন্টেশনের অভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।     সেই ক্ষেত্রে আমরা আমাদের কথাগুলোকে কয়েক ধাপে সাজিয়ে নিতে পারি।

   

প্রথমেই আমরা সবার সামনে কি গল্প/কথা বলতে চাইছি তা ঠিকমত সাজিয়ে নেয়া এবং এর কন্সেপ্ট সম্পর্কে খুব ভালোভাবে আইডিয়া থাকা           খুবই জরুরি।

“A successful talk is a little miracle–people see the world differently afterward” — Chris Anderson

একটা প্রেজেন্টেশন দেয়ার সময় আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল আমরা একসাথে অনেক কিছু কভার করার চেষ্টা করি। কিন্তু অল্প সময়ে এত      কিছু সংক্ষেপে বলা যায় না। আমাদের কিছু স্পেসিফিক উদাহরণ দরকার আমাদের চিন্তাভাবনা , আমাদের আইডিয়াকে সবার সামনে তুলে              ধরার জন্য। তাই আমাদের কথাবার্তাকে সেই জায়গায় সংক্ষেপ করা উচিত যেখানে  উদাহরণের মাধ্যমে সবার সামনে আমরা আমাদের                কথাগুলোকে খুবই  অল্প সময়ের মধ্যে প্রকাশ করতে পারি।

যদি একটি গল্প/কথা সাক্সেসফুল না হয় তাহলে এর পিছনে একমাত্র কারণ স্পিকার কথাগুলোকে ঠিকমত সাজিয়ে নেন নি এবং আডিয়েন্সের            ইন্টারেস্টের লেভেলকে ঠিকমত বুঝতে পারেন নি। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো  মানুষ কখনো কোনো সংগঠন / প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে                শুনতে আগ্রহী নয়। আইডিয়া এবং গল্প আমাদের বিমোহিত করে। সংগঠন আমাদেরকে বিষন্ন করে- কারণ আমরা  আসল গল্পের সাথে                  এইগুলোকে রিলেট করতে পারে না।

 

এরপরের স্টেপ হলো কিভাবে প্রেজেন্টেশন দেয়া হবে সেই ব্যাপারে প্ল্যান করা। তিন ভাবে প্রেজেন্টেশন দেয়া সম্ভব —–

১। স্ক্রিপ্ট থেকে সরাসরি পড়া যেতে পারে। 

২। সম্পূর্ণ স্ক্রিপ্ট রেডি না করে কিছু বুলেট পয়েন্ট লিখা যেতে পারে এবং পয়েন্টগুলো দেখে প্রেজেন্টেশন দেয়া যেতে পারে

৩। অথবা সম্পূর্ণ স্ক্রিপ্ট মুখস্ত করে বার বার প্রাক্টিস করে প্রেজেন্টেশন দেয়া যেতে পারে

স্ক্রিপ্ট থেকে সরাসরি পড়ার আইডিয়াটা খুব বেশি কার্যকর নয়, অডিয়েন্স বিষয়টা খুব ভালোভাবে নেন না।

“If a successful talk is a journey , make sure you don’t start to annoy your travel companions along the               way”—– Chris Anderson

 

পরবর্তী স্টেপ হলো স্টেইজ প্রেজেন্টেশন ডেভেলপ করা। একজন ইনএক্সপেরিয়েন্সড স্পিকারে জন্য স্টেইজ এ দাঁড়িয়ে কথা বলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ        একটি বিষয়। স্টেইজ পারফরমেন্স ইম্প্রুভ করার একটি বিষয় হলো স্পিকারকে তার বডির নিচের পার্ট সবসময় মোশনলেস রাখতে হয়। কিছু        কিছু ক্ষেত্রে অনেকেই পুরো স্টেইজে হেঁটে প্রেজেন্টেশন দিয়ে থাকে, এই আইডিয়াও খুব একটা খারাপ না, কারণ এতে স্পিকার নারভাস হয় না।

তবে আই কন্টেক্ট করা হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফিজিকাল অ্যাক্ট। এইক্ষেত্রে ৫/৬ জন বন্ধুসুলভ মানুষ খুঁজে বের করতে হবে অডিয়েন্সের বিভিন্ন      পার্ট থেকে। এবং যখন স্পিকার কথা বলবে তখন এই মানুষগুলোর চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে হবে। আই কন্টেক্ট খুবই পাওয়ারফুল।

 

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল মাল্টিমিডিয়া প্ল্যান করা। যদি আমাদের কাছে ফটোগ্রাফস থাকে তাহলে সেগুলো অডিয়েন্সকে প্রেজেন্টেশনের সময়     দেখানো যেতে পারে, এতে আমরা যেই টপিক নিয়ে কথা বলছি সেই টপিকটি জীবন্ত হয়ে উঠে। এইক্ষেত্রে স্লাইড আমাদের কথাগুলোকে সাজানোর      ক্ষেত্রে অনেক হেল্প করে, এতে অডিয়েন্স কখনোই অর্থহীন বাক্যের মধ্যে হারিয়ে যায় না।

আরেকটি বিষয় ও এইক্ষেত্রে কার্যকর- তা হলো স্টইজে নিজে কথা না বলে আমরা যেই টপিক নিয়ে কথা বলতে চাইছি তার ভিডিও ক্লিপ তৈরী          করা । ভিডিও খুবই ইফেক্টিভ তবে কিছু ভুল এক্ষেত্রে এড়াতে হবে । একটা ভিডিও ক্লিপ খুবই সংক্ষিপ্ত হতে হয়- ৬০ সেকেন্ড এর বেশি হলেই            অডিয়েন্সের মনোযোগ হারানোর রিস্ক থাকে। কর্পোরেট টাইপ ভিডিও কখনো দেখানো উচিত নয় , এইটা অনেকটা সেলফ-প্রমোশনাল মনে হয়।        আর যাই হোক না কেন কখনো নিজের ইন্টারভিউ ভিডিও ক্লিপে শো করা উচিত নয়।

এইসব কিছুর সমন্বয় করে একটি সুন্দর প্রেজেন্টেশন দেয়া সম্ভব। তবে একটি সুন্দর প্রেজেন্টেশন সব কিছুকে অনেক স্মৃতিময় করতে পারে। যদি        আমাদের কিছু বলার থাকে তাহলে কথাগুলোকে খুব সুন্দরভাবে নিজের মত করে প্রেজেন্ট করা সম্ভব।

 

নাফিসা রায়হানা
Author: নাফিসা রায়হানা

Be less curious about people and more curious about ideas-- Marie Curie.

Permanent link to this article: https://www.borgomul.com/nafisa-raihana/3609/


মন্তব্য করুন আপনার ফেসবুক প্রোফাইল ব্যবহার করে

মন্তব্য করুন